Header Ads

Header ADS

ইউটিউব ফেয়ার ইউজ পলিসি



আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। বন্ধুরা আরেকটি নতুন টপিক নিয়ে হাজির হলাম। আজকে যে বিষয় নিয়ে কথা বলবো সেটা হলো ইউটিউব ফেয়ার ইউজ পলিসিকে নিয়ে। ইউটিউবে যত রুলস বা পলিসির কথা উল্লেখ করা আছে তার মধ্যে এই ফেয়ার ইউজ পলিসিটা একটু জটিল। আর এই ফেয়ার ইউজ নিয়ে ইউটিউবারদের মনে রয়েছে নানান ভুল ধারণা। যার ফলে ভবিষ্যৎতে তাদের চ্যানেলে কপিরাইট স্ট্রাইক আসা, মনিটাইজেশন নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হতে পারে। এখন আপনি যদি একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হন অথবা যদি আপনার একটি কি চ্যানেল থাকে তাহলে অবশ্যই এই ফেয়ার ইউজ সম্পর্কে আপনার জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর সেই জন্য  আজকের ব্লগে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব ফেয়ার ইউজ কি, এটা কিভাবে কাজ করে,কতটুকু অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করলে কপিরাইট স্ট্রাইক আসবে না সেটা ফেয়ার ইউজের আন্ডারে পড়বে এবং সবশেষে আপনাদের বেশ কিছু টিপস দিবো যেগুলো মেনে অন্যের কনটেন্ট ফেয়ার ইউজ এর আন্ডারে ব্যবহার করে ভিডিও বানালে সেখানে কোনো কপিরাইট স্ট্রাইক আসবে না তো অবশ্যই ব্লগটি মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ পড়বেন।

 আর যদি সম্পূর্ণ ব্লগ পড়ার সময় না হলে এই ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন। 



Fair Use কি 

 বন্ধুরা ফেয়ার ইউজ হলো একটা আইন যেখানে আপনি অন্যের কনটেন্ট বিশেষ কোনো প্রয়োজনে, বিশেষ কিছু শর্ত সাপেক্ষে কনটেন্ট এর মালিকের অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন। এখন স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন আসে যদি আমি অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করি তাহলে কি আমার চ্যানেলে কপিরাইট স্ট্রাইক আসবে না?  বন্ধুরা স্ট্রাইক আসতেই পারে, তবে এই স্ট্রাইক থেকে বাঁচার জন্য অথবা এই স্ট্রাইকে যেনো আপনার এবং আপনার চ্যানেলোর কোনো ক্ষতি না হয় তার জন্যই এই ফেয়ার ইউজ। যেহেতু ফেয়ার ইউজ একটা আইন এটা একেক দেশে একেক রকম হতে পারে তবে। যেমন আমাদের বাংলাদেশের আইনে বলা হয়েছে অন্যের কনটেন্ট কোনো সৎ, শিক্ষামূলক বা গবেষণামূলক কাজে কোনো রকম বানিজ্য ছাড়া ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু অন্যের কনটেন্ট কে কোনো ভাবেই পুনরায় নিজের বলে বিক্রি করতে পারবেন না তবে ইউটিউবে মনিটাইজ সেখান থেকে আপনি এড রেভিনিউ ইনকাম করতে পারবেন। আবার আমেরিকার আইনে এই ফেয়ার ইউজ কে নিয়ে বেশ কিছু শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে যেমনঃ-
Commentary 
Criticism 
News reporting 
Research 

অর্থাৎ এই শর্ত গুলো মেনে যদি অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করেন তাহলে সেগুলো ফেয়ার ইউজ এর আন্ডারে পড়বে।এখন আপনাকে শুধুমাত্র এই শর্ত গুলোর নাম জানলে হবে না, এই শর্ত গুলোর মধ্যে কোন ধরনের ভিডিও পড়বে সেগুলো আপনাকে জানতে হবে।

কোন ধরনের ভিডিও ফেয়ার ইউজ এর মধ্যে পড়বেঃ-

বন্ধুরা শুরুতে চলুন শুরুতে কথা বলি  commentary নিয়ে। এটার মানে হলো কোনো একটা বিষয় সেটা হতে পারে কোনো আলোচনা, গান, মুভি কিংবা মুভি ট্রেইলার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে সেখানে আপনার একটা মতামত দর্শকদের মাঝে শেয়ার করা। যেমন রিএকশন ভিডিও, বন্ধুরা এ ধরনের ভিডিওতে আপনারা দেখবেন বিভিন্ন গান বা মুভির উপর সেসব চ্যানেলের ক্রিয়েটররা নিজেদের মতামত অথবা একটা রিএকশন দেয়, এই বিষয় গুলো কিন্তু ফেয়ার ইউজ এর মধ্যে পড়বে। 
এরপরে আছে criticism , বন্ধুরা এটার মানে হল রোস্ট ভিডিও টাইপ আরকি, রোস্টিং ভিডিও কি আপনারা হয়তো সবাই জানেন। এখানে কিন্তু ক্রিয়েটর বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ কিছু মোমোন্ট, ডায়লগ ইত্যাদি ভিডিও ক্লিপ তাদের ভিডিওর মধ্যে ব্যবহার করে, তাদের রোস্ট ভিডিওকে আরো মজাদার বানানোর জন্য। এই সমস্ত ভিডিও কিন্তু ফেয়ার ইউজ এর মধ্যে পড়বে। 
বন্ধুরা তিন নম্বরে রয়েছে news reporting,অনেক সময় একটা নিউজ ভিডিও বানাতে আমাদের বিভিন্ন ঘটনার ভিডিও ফুটেজ প্রয়োজন হয়। যেমন ধরুন আপনি টিভি কিংবা ইউটিউবে একটা নিউজ দেখছেন আমেরিকায় একটা ঘটনা ঘটলো, এখানে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ কিন্তু আপনার দেখা চ্যানেলের সাংবাদিকরা রেকর্ড করে আনে নাই,তারা বিভিন্ন  সোর্স থেকে ভিডিও সংগ্রহ করে মাঝে মধ্যে এমন নিউজ তৈরি করে আর এই ধরনের ভিডিও গুলো কিন্তু ফেয়ার ইউজ হিসেবে ধরা হয়। 
বন্ধুরা সর্বশেষ রয়েছে রিসার্চ, এটা খুবই সহজ বিষয়, ধরুন কোনো একটা বিষয় নিয়ে আপনি গবেষণা করছেন অথবা মানুষকে কোনো কিছু শেখাতে চান সেক্ষেত্রে আপনার প্রয়োজন অনুসারে আপনি অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতে পারবেন যা ফেয়ার ইউজ এর মধ্যে পড়বে।
এগুলো ছাড়াও মুভি এক্সপ্লেন, ডকুমেন্টারি ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনি অন্যের কনটেন্ট ফেয়ার ইউজ এর মধ্যে রেখে ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে আবার প্রশ্ন করতে পারেন যে এই শর্তের মধ্যে পড়বে যেসব ভিডিও সেগুলো তৈরি করলে কিংবা এই শর্ত গুলো মেনে ভিডিও তৈরি করলে কি কপিরাইট আসবে না? বন্ধুরা এখানেও আসবে, তবে কপিরাইট আসলে আপনি ইউটিউবকে কাউন্টার নোটিফিকেশন পাঠাতে পারবেন, সেখানে আপনি যে ফেয়ার ইউজ করেছেন সেটার কথা বলবেন। এখানে ইউটিউব যাচাই করার পর যদি দেখে আপনি ফেয়ার ইউজ এর মধ্যে অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করেছেন তাহলে আপনার চ্যানেল থেকে স্ট্রাইক তুলে নেওয়া হবে, আর আপনার ভিডিও ফেয়ার ইউজ না হলে স্ট্রাইক চ্যানেলে থেকে যাবে। এখন যদি আপনার চ্যানেল থেকে স্ট্রাইক তুলে নেওয়া হয় তাহলে এক্ষেত্রে কনটেন্ট এর মালিক চাইলে মামলা করতে পারেন,আর তখন কিন্তু কোর্ট সিদ্ধান্ত দিবে আপনার ভিডিও ফেয়ার ইউজ হ্যা কি না। এখন আমাদের দেশে এসব বিষয়ের জন্য ব্যাক্তিগত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের কোনো উকিল থাকে না যার কারণে এই কপিরাইট বা ফেয়ার ইউজ এর বিষয় গুলো ইউটিউব পর্যন্ত থেকে যায়। তবে বড় প্রতিষ্ঠান যারা আছে তাদের কিন্তু এসমস্ত বিষয়ের জন্য উকিল থাকে। 

এখন আপনি যদি ফেয়ার ইউজ এর মধ্যে অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতে চান আপনাকে বেশ কিছু টিপস দিবো যেগুলো মানলে আপনি অনেকটা নিরাপদ ভাবে অন্যের কনটেন্ট ফেয়ার ইউজ হিসবে ব্যবহার করতে পারবেন। 

১.আপনি যদি অন্যের কোনো ইমেজ কিংবা ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করেন তাহলে চেষ্টা করবেন সেই ইমেজ বা ভিডিওটি আপনার ভিডিওর সম্পূর্ণ স্ক্রিনে ব্যবহার না করা।আপনার ভিডিওর কোনো একপাশে, ছোট করে ব্যবহার করবেন তাহলে এখানে আপনার ভিডিওটিতে কপিরাইট আসার সম্ভাবনা কম থাকে। যেমন রিএকশন ভিডিওতে এরকম ভাবে অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করা হয়।

২.যদি অন্য কারো ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই সেই ভিডিওর অডিও কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক রিমুভ করে আপনি নিজে সেখানে ভয়েস ওভার করবেন। কারন অনেক সময় দেখা যায় এসব ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বিভিন্ন রেকর্ড লেভেলের কাছে, তখন তারা আপনাকে স্ট্রাইক দিলে, আপনার আর কিছুই করার থাকবে না।

৩. অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করলে চেষ্টা করবেন, বড় প্রতিষ্ঠানের ভিডিও ব্যবহার করার , কারণ অনেক সময় দেখা যায় ছোট ক্রিয়েটররা ফেয়ার ইউজ সম্পর্কে তেমন একটা জানে না তখন তারা না বুঝে স্ট্রাইক দিয়ে দেয়। কিন্তু বড় ক্রিয়েটররা ভালো ভাবেই এই ফেয়ার ইউজকে বোঝ যার কারণে তারা আপনাকে স্ট্রাইক দিবে না।

৪.আর অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করলে করলে ৭ঃ৩ অর্থাৎ একটি ভিডিও ৭০% আপনার নিজের ভিডিও আর ৩০% অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতে পারবেন । এ সম্পর্কে ইউটিউব কিছু বলে নেই, তবে অনেক এক্সপার্টরা এভাবে ভিডিও ব্যবহার করলে কপিরাইট আসার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেছেন যদি ফেয়ার ইউজ এর মধ্যে অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করা হয়। যেমন একটা ১০ মিনিটের ভিডিওতে ৭ মিনিট হতে হবে আপনার আর ৩ মিনিট অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু এই ৩ মিনিট আপনার ভিডিওর কোনো এক জায়গায় একসাথে ব্যবহার করতে পারবেন না, এই ৩ মিনিট কেটে বিভিন্ন অংশ আপনার পুরো ভিডিও জুড়ে একটু একটু ব্যবহার করতে হবে। 

আর এই টিপস গুলো মেনে আপনি অন্যের কনটেন্ট ফেয়ার ইউজ হিসেবে ব্যবহার করলে আপনার চ্যানেল অনেকটাই নিরাপদ থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই ছিল ইউটিউবের ফেয়ার ইউজ, আশা করি বুঝতে পেরেছেন। যদি ফেয়ার ইউজ অন্য কোনো প্রশ্ন থাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আজকে এই পর্যন্তই ধন্যবাদ। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.